Kaptai Lake - কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য
রাংগামাটি জেলার কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের এক শান্ত পাহাড়ি সৌন্দর্যের আধার। রাংগামাটি জেলার একটা বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে এই কাপ্তাই লেক। কাপ্তাই লেকের ভ্রমণটা মূলত নৌকা নিয়েই পুরোটা করা হয়। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন স্থানে নেমে নেমে ঘুরে দেখে আবার নৌকায় ফেরা। খুবই রিলাক্সড একটা ট্রিপ হচ্ছে রাঙ্গামাটি ট্রিপ।
রিজার্ভ বাজার রাঙ্গামাটির একটি মূল বাজার বা স্থান হলেও রিজার্ভ বাজার পৌঁছানোর আগেই কিছু ভালো হোটেল রয়েছে, সেখানেই মূলত ট্যুরিস্টরা থাকে।
বেশিরভাগ হোটেলই একেবারে লেকের কোল ঘেঁষে বানানো, তাই বারান্দা কিংবা ছাদ থেকেই কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য উপভোগও করা যায়।
হোটেলের নিচেই ইঞ্জিন চালিত ট্রলার পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন আকৃতির হয়। ১০ জন থেকে শুরু করে ১৫০ জন ধারণ ক্ষমতার ট্রলার পাওয়া যায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেক এবং এর আশে পাশে যেই যায়গাগুলো আছে, সেগুলো ঘুরিয়ে আনেন তারা। তবে স্থানের চেয়ে নৌকায় ঘোরার বিষয়টাই উপভোগ্য হয় বেশি। নৌকার ছাদে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, হাসি-ঠাট্টা এগুলোই মনে থাকবে। রাজবন বিহার ঘুরে দ্বীপ্পান্নগর মুর্তি দেখে শুভলং ঝর্নায় যেতে যেতেই পথে কোন ছোট পাহাড়ি দ্বীপে পাহাড়ি খাবারের কথা আগে থেকে বলে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে শুভলং ঘুরে এসে খাবার প্রস্তুত পাওয়া যাবে।
রেস্টুরেন্টগুলোও দারুণ, একেবারে ইকো- ন্যাচারালভাবে তৈরি। বাশ-কাঠের তৈরি রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি দোলনা- কাঠের বেঞ্চ, হ্যামক, জুমঘর সহ অনেক কিছু করে রাখা আছে খাবার আগে কিংবা পরে বিশ্রাম নেয়ার জন্য।
কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ জলে নিজেদের পছন্দমতন যায়গায় নেমে গা ভিজিয়ে নেয়ার আগে অবশ্যই নিরাপত্তার কথা খেয়াল রাখতে হবে। সাতার না জানলে কোনভাবেই নামা যাবে না, আর নামলেও লাইফ জ্যাকেট অবশ্যই পড়ে নামতে হবে।
পুরো সময়টাই ছোট-বড় অনেক পাহাড় দেখা যাবে কাপ্তাই লেকে। মাঝে মাঝে বড় বড় দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে যখন নৌকা যাবে, তখন এক মুহূর্তের জন্য মনে হবে এ যেন অদেখা বাংলাদেশ, এ যেন গল্পের অদেখা কোন অপ্সরী।
বিকেলটা কাটবে রাঙ্গামাটির বিখ্যাত ঝুলন্ত ব্রিজের সাথে। ছোটবেলায় ভ্রমণ বলতে যেই কয়েকটা আকর্ষণীয় ছবি দেখতাম, তার মধ্যে এই ঝুলন্ত ব্রিজ একটা ছিলো।
ঝুলন্ত ব্রিজের এক পাশে রাঙ্গামাটি শহর, আরেক পাশে গেলেই পাবেন পাহাড়িদের তৈরি শাড়ি, চাদর, শাল, মাফলার, ব্যাগ, আচার সহ আরো অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস।।
সন্ধায় হোটেলে ফিরতে ফিরতে সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন নৌকার ছাদে বসেই। লাল আগুন জ্বালা একটা আভা মনে হবে পুরো কাপ্তাই লেকটা তখন।
কোন এক সময় যখন কর্ম ব্যস্ত জীবনে আবার ফিরে আসবেন, আমি নিশ্চিত তখন কোন স্থানের কথা আলাদা করে মনে হউয়ার চেয়ে পুরো নৌকা ভ্রমণ সহ কাটানো পুরোটা দিনই আপনার মনে পড়বে। কেমন একটা ঘোর লাগা কাজ করবে।
কেবল একটা কথা মাথায় রাখলেই হবে, যেন কোন প্রকার অপচনশীল দ্রব্য কাপ্তাই লেকে কিংবা কোন স্থানে আমরা ফেলে না আসি। সম্ভব হলে অন্যের ফেলে আসা ময়লা যদি আমরা নিজেরা সাথে করে নিয়ে আসতে পারি, তাহলেই আমরা আমাদের পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের সন্ধান পেয়ে যাবো অচিরেই।।
Comments
Post a Comment